বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়।

0 9,127

শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের তিন বছর পূর্তি ও চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ২৪ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি। একই সঙ্গে উদযাপন করেছি মুজিববর্ষ।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে এই উদযাপন কিছুটা সীমিত হলেও মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার কোন কমতি ছিল না। দেশবাসী মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে নতুন করে দেশ গড়ার শপথ নিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল একটি শোষণ-বঞ্চনামুক্ত গণতান্ত্রিক এবং অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনের। যেখানে সকল ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি-পেশার মানুষ সুখে-শান্তিতে বসবাস করবে। প্রতিটি মানুষ অন্ন-বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসার সুযোগ পাবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি তাকে সপরিবারে হত্যা করে। তাকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, তারপর অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র। সামরিক শাসনের যাতাকলে নিষ্পেষণ, গণতন্ত্রহীনতা, মুক্তিযুদ্ধের  চেতনা-বিচ্যূতি, ইতিহাস বিকৃতিসহ শাসকদের নানা অপকীর্তি প্রত্যক্ষ করেছে এ দেশের মানুষ। জনগণের সম্পদ লুটপাট করে, তাদের বঞ্চিত রেখে, ৩০-লাখ শহিদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করে বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল করে রেখেছিল।

১৯৭৫ সালের বিয়োগান্তক ঘটনার পর ৬ বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে আমি ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করি। আমার একটাই লক্ষ্য ছিল জাতির পিতার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করে বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, বলেন তিনি।

তিনি বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায়। আমরা দায়িত্ব নিয়েই বাংলাদেশকে একটি আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। মাঝখানে ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত বিএনপি-জামাত এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সে প্রচেষ্টায় ছেদ পড়েছিল। কিন্তু ২০০৯ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত ১৩ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটি আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্থ-সামাজিক এবং অবকাঠামো খাতে বাংলাদেশ বিস্ময়কর উন্নয়ন সাধন করেছে। ২০২১ সাল ছিল আমাদের উন্নয়ন অভিযাত্রার এক অভূতপূর্ব স্বীকৃতির বছর। গত বছর আমরা উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত যোগ্যতা অর্জন করেছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষে এই অর্জন বাঙালি জাতির জন্য অত্যন্ত আনন্দের এবং গর্বের।

Leave A Reply

Your email address will not be published.