গণতন্ত্র ও ন্যায়ের ভিত্তিতে দেশ চালাচ্ছে সরকার: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, গণতন্ত্র ও ন্যায়ের ভিত্তিতে দেশ চালাচ্ছে সরকার।

0 19,090

রোববার (২৮ আগস্ট) রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধুর দর্শন: একুশ শতকের প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক এক সেমিনারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। বিআইআইএসএস এ সেমিনারের আয়োজন করে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের সর্বশেষ প্রতিবেদনে মানবাধিকার বা অন্যান্য বিষয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়নি- এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের আনিসুল হক বলেন, এ বছরের মার্চ মাসে জেনেভায় মিশেল ব্যাচেলেটের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল। সাক্ষাৎকালে মিশেল ব্যাচেলেট বাংলাদেশ এবং এখানকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে বংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। এরপর চলতি মাসে হাইকমিশনার বাংলাদেশে এসেছিলেন এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো দেখে গেছেন। হাইকমিশনার যখন দেশে এসেছিলেন তখন বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ তার সাথে দেখা করেছেন, কথা বলেছেন এবং তিনি সব কিছু দেখে মন্তব্য করেছেন। এ থেকে বোঝা যায় তার মন্তব্যটা (নেতিবাচক কোনো কিছু না আসা) অত্যন্ত ‘ডিপ রুটেড এবং ওয়েল আন্ডারস্ট্যুড’। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার যে, গণতন্ত্র এবং ইক্যুইটির (ন্যায়পরায়ণতা) উপরে বিশ্বাস করে দেশ চালাচ্ছেন, সেটাও বোঝা যায়।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর সংকল্প, দূরদৃষ্টি, সাহসিকতার ফলেই পাকিস্তানি অত্যাচার-অবিচার থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, যা এখনও এ দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করছে।

বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতির প্রশংসা করে আইনমন্ত্রী বলেন, তৎকালীন দ্বি-মেরু বিশ্বে জাতির পিতা সফলভাবে নিরপেক্ষতার নীতি সমুন্নত রেখেছিলেন। তার স্মরণীয় নীতি, ‘সকলের প্রতি বন্ধত্ব, কারো প্রতি শত্রুতা নয়’ – বাংলাদেশের পরারাষ্ট্র নীতির মূল ভিত্তি এবং শান্তি, সহযোগিতা, উন্নয়ন এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে একটি উত্তম বিশ্ব গড়ার জন্য সম্পূর্ণ উপযোগী। তার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন পররাষ্ট্রনীতিই বাংলাদেশকে ‘কোল্ড ওয়ার’ থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল।

আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু একজন নেতাই ছিলেন না, তিনি রাজনীতির দার্শনিক। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে, তার আদর্শ ও দর্শনকে শেষ করা যায় নি। তার আদর্শ এখনও আমাদের মধ্যে টিকে আছে। তার চিন্তা ও দর্শনে ছিল বাংলাদেশের উন্নয়ন। তিনি বাংলাদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র ও দুর্নীতিমুক্ত করতে চেয়েছিলেন।

আনিসুল হক বলেন, গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। বাঙালি জাতীয়তাবাদের জনকও তিনি। এর প্রমাণ হচ্ছে- বঙ্গবন্ধু রবীন্দ্রনাথের ‘আমার সোনার বাংলা’কে জাতীয় সংগীত হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন যা, বাঙালি জাতীয়তাবাদকে প্রতিনিধিত্ব করে।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। গণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্রের মিশেলে তিনি একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করতে চেয়েছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিআইআইএসএস- এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান স্বাগত বক্তব্য দেন।

সেমিনারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বৈদেশিক দূতাবাসের প্রতিনিধি, সাবেক কূটনীতিক, ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষণা সংস্থার প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব অংশগ্রহণ করেন। সূত্র বাসস।

Leave A Reply

Your email address will not be published.