বিশ্বকাপ জেতার মতো ফুটবল খেলেন না মেসি-নেইমাররা!

বিশ্বকাপের সফলতম দেশের নাম ব্রাজিল। পাঁচবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নদের ফুটবলে সাফল্যের জন্য ডাকা হয় ফুটবলের দেশ। লাতিন আমেরিকার আরেক দেশ আর্জেন্টিনাও দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। একুশের দশকের তারকা ফুটবলারদের একজন এ দেশটিরই। লাতিন এই দুই দেশের সুন্দর ফুটবল ও কিংবদন্তিদের খেলায় বুঁদ হয়ে থেকেছে বিশ্ব। অথচ এই দেশ দুটিরই নাকি নেই বিশ্বকাপ জয়ের সামর্থ্য। এমনটাই বলেছেন ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে।

0 12,922

দক্ষিণ আমেরিকার তিনটি দেশ ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ে মিলেই জিতেছে ৯টি বিশ্বকাপ। ২১টি বিশ্বকাপের প্রায় অর্ধেক জেতা এই মহাদেশে সবশেষ শিরোপা গেছে ২০০২ সালে। জার্মানিকে হারিয়ে ব্রাজিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আর মাত্র একটি বিশ্বকাপেই ফাইনালে খেলেছে দক্ষিণ আমেরিকার কোন দেশ। ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে রানার্সআপ হয় লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা।

বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি তারকা এমবাপ্পের কথা অনুযায়ী ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার এই শিরোপাখরা শিগগিরই দূর হচ্ছে না। তার মতে, শিরোপা জেতার মতো ফুটবল খেলে না ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা।

সবশেষ চার বিশ্বকাপের তিনটিতেই হয়েছে অল-ইউরোপিয়ান ফাইনাল। লাতিন দুই পরাশক্তি এ সময়ে বিদায় নিয়েছে ইউরোপিয়ান দলের কাছে হেরে। তাই এমবাপ্পে মনে করেন, লাতিনদের তুলনায় ইউরোপিয়ানরা বেশি আধুনিক ফুটবল খেলে। শিরোপার লড়াইয়ে খেলার ধরনেই পিছিয়ে গেছে পেলে-ম্যারাডোনার দেশ।

ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম টিএনটি ব্রাজিলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পিএসজি তারকা বলেন, ‘আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল বিশ্বকাপ জেতার মতো উঁচু মানের ফুটবল খেলে না। ইউরোপের ফুটবলের মতো উন্নত কোনো ঘরানার ফুটবল নেই। বিগত বিশ্বকাপগুলো দেখলেই আপনি বুঝবেন।’

এমবাপ্পের কথার প্রমাণ পরিসংখ্যানেই পাওয়া যায়। কোরিয়া-জাপান বিশ্বকাপে শিরোপা জেতার পর চার আসরের প্রতিবার ব্রাজিল বিদায় নিয়েছে ইউরোপিয়ান দলের বিপক্ষে হেরে। তিনবারই তাদের থামতে হয়েছে কোয়ার্টার ফাইনালে, যেখানে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ও বেলজিয়াম। মাঝখানে ২০১৪-এর নিজ দেশে আয়োজিত বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে উঠেছিল নেইমার-অস্কারের ব্রাজিল। সেখানে সেমিফাইনালে তাদের লজ্জায় ডুবিয়েছিল জার্মানি। ৭-১ গোলের সেই হারে ইউরোপিয়ান গতিশীল ফুটবলের বিপক্ষে লাতিন ফুটবলের দুর্বলতা পরিষ্কার ফুটে ওঠে।

অন্যদিকে আর্জেন্টিনা ২০১৪ সালের আসরে ফাইনালে জার্মানির কাছে হারের আগে-পরে কোনো আসরেই পেরোতে পারেনি কোয়ার্টার ফাইনালের গণ্ডি। সবশেষ রাশিয়া বিশ্বকাপে তো আর্জেন্টিনাকে একাই নাচিয়েছিলেন স্বয়ং এমবাপ্পে।

ইউরোপিয়ানদের এমন নিরঙ্কুশ আধিপত্যের পেছনে এমবাপ্পে আরও কিছু কারণ খুঁজে পাচ্ছেন। তার মতে, এ অঞ্চলের বাছাইপর্বেও বড় ভূমিকা রেখেছে দলগুলোর অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠায়। ইউরোপিয়ান অঞ্চলের বাছাইপর্ব এতটাই প্রতিযোগিতামূলক যে, একটু পা হড়কালেই বাদ পড়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে। যে কারণে গত কয়েক আসরেই ইতালি বা নেদারল্যান্ডসের মতো দল বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে পারেনি। এ ছাড়া নেশন্স কাপেরও ভূমিকা আছে। এই টুর্নামেন্টগুলোর প্রতিযোগিতা নিজেদের দল গঠন ও প্রস্তুতিতে সাহায্য করে বলে মত তার।

এমবাপ্পে বলেন, ‘উয়েফা নেশন্স লিগটা এর একটা উদাহরণ বলতে পারেন। আমরা তাই বিশ্বকাপের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েই যাব।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.