মেসি-রোনালদোর সামনে শেষ সুযোগ!

নিঃসন্দেহে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসি বর্তমান সময়ের সেরা দুই ফুটবলার। জাতীয় দল কিংবা ক্লাব সব পর্যায়েই একের পর এক রেকর্ডে নিজেদের নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। কিন্তু এবার কি তাদের শেষের শুরু হয়ে গেল! বয়সটা তো কম নয়। যে বয়সে অন্যরা অবসরের চিন্তা করে, সেই ৩৪-৩৫ বছরেও এখনো তাদের মাথায় গোলের চিন্তা। স্বপ্ন দেখেন দলকে শিরোপা এনে দেওয়ার। কিন্তু কোথায় যেন ছন্দপতন। আগের মতো ঠিক পারছেন না কেউই। না মেসি, না রোনালদো।

0 15,094

বার্সেলোনায় যেমন সেরা সময় কাটিয়ে এসেছেন মেসি, তেমনি রিয়াল মাদ্রিদে স্বপ্নময় সময় কেটেছে রোনালদোরও। এরই মধ্যে তারা এখন ক্লাব পাল্টে অন্য জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন। কিন্তু দলবদলের সঙ্গে ফর্মটাও যেন ফেলে রেখে এসেছেন। নতুন ক্লাবের হয়ে ঠিক ফর্মে না থাকা দুজনই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলো থেকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ছিটকে গেছেন।

গত দলবদলের মৌসুমে ক্লাব ছাড়ার সময় মেসি-রোনালদো দুজনেই নতুন ক্লাবের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। পিএসজির হয়ে মেসি কিংবা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে রোনালদোদের শিরোপা ঘরে তোলার ভালো সম্ভাবনাও ছিল। কারণ, দুই দলেই তারকার ছড়াছড়ি শুরু থেকেই তাদের ফেভারিটের তকমাই দিয়েছিল।

কিন্তু গত সপ্তাহে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে সুপার সিক্সটিনের দ্বিতীয় লেগে এগিয়ে থেকেও বিস্ময় জাগিয়ে বাদ পড়ে গেছে মেসির পিএসজি। আর এরপরই সব দায় এসে পড়েছে যেন আর্জেন্টাইন এ তারকার ওপর। যার কিছুটা আঁচ করা যায় সবশেষ ম্যাচে পিএসজির সমর্থকদের দুয়ো ধ্বনিতে। হবেই না কেন! আরাধ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততেই তো বার্সেলোনা থেকে মেসিকে উড়িয়ে এনেছিলেন প্যারিস সেইন্ট জার্মেই সভাপতি নাসের আল খেলাইফি।

এদিকে অ্যাথলেটিকো সবসময়ই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর প্রিয় প্রতিপক্ষ। ক্লাবটির বিপক্ষে তার রেকর্ডও সে কথাই বলছে। রিয়াল মাদ্রিদে থাকতে একবার অনেকটা রোনালদোর কারণেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের স্বাদ নেওয়া হয়নি অ্যাথলেটিকোর। য়্যুভেন্তাসে গিয়েও এমন এক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানো। সেবার ২-০ গোলে য়্যুভেন্তাস পিছিয়ে থাকার পরও রোনালদোর হ্যাটট্রিকে উড়ে গিয়েছিল দিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা।

কিন্তু এবার তেমনটা হয়নি, রূপকথা বদলে পর্তুগিজ তারকাকে হারাল অ্যাথলেটিকো। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোয় তারা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে। আর ঘরের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ড থেকে কান্না নিয়ে বাড়ি ফিরল রেড ডেভিল সমর্থকরা। আর তাই বর্তমান সময়ের সেরা এ দুই তারকাকে ছাড়াই চলবে টুর্নামেন্ট।

এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সুপার ষোলো থেকে ছিটকে গেছেন মেসি-রোনালদো। এর আগে অবশ্য তাদের ক্লাব ভিন্ন ছিল। বার্সেলোনার হয়ে খেলেছিলেন মেসি আর য়্যুভেন্তাসের হয়ে রোনালদো।

তবে এখনো নিজেদের প্রমাণ করার কিংবা শেষবারের মতো রাঙানোর একটি সুযোগ রয়েছে দুজনেরই। সেটি হচ্ছে আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কাতার বিশ্বকাপ। তবে এরই মধ্যে লাতিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে মেসির আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ টিকিট নিশ্চিত হলেও এখনো দিল্লি বহু দূরে রোনালদোর পর্তুগালের। কাতারের টিকিট পেতে প্রথমে ২৪ মার্চ তুরস্কের বিপক্ষে জিততে হবে। এরপর ইতালি এবং উত্তর মেসিডোনিয়ার মধ্যে জয়ী দলের সঙ্গে ২৯ মার্চের প্লে-অফ ফাইনালে জিততে পারলেই কেবল কাতারের টিকিট পাবে তারা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.