মাতৃভাষা দিবসে জমে উঠেছে বইমেলা

এ যেন জাতিসত্তার শক্তিবলে হাজারো মানুষ একসঙ্গে। মায়ের ভাষায় লেখা বই কিনতে, বাংলা ভাষার বিশাল সাহিত্য ভান্ডারে ডুব দিতে, একুশে ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা কানায় কানায় পূর্ণ। বেচাকেনার ঊর্ধ্বমুখী পারদে হাসি ফুটেছে প্রকাশক ও বিক্রেতার মুখেও।

0 11,619

ফাল্গুনের মিষ্টি বাতাস কানাকানিতে বলছে ঠিক আজ থেকে ৭০ বছর আগের এই দিনটিতে মায়ের ভাষার জন্য একটি জাতি করেছিল আত্মদান। আর ঠিক এমন অমোঘ পরিবেশে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় পদচারণা হাজারো বাঙালির। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বইমেলার দুয়ার খুলেছে সকাল আটটায়। প্রভাতফেরি শেষে অনেকেই এসেছেন নতুন বইয়ের খোঁজে।

বাংলা একাডেমি বর্ধমান হাউজ থেকে শুরু করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। বইয়ের প্রতিটি স্টলেই বইপ্রেমীদের ভিড়। মাতৃভাষার বিশাল সাহিত্য ভান্ডারের রস আস্বাদনে মগ্ন শিশু-কিশোর-প্রবীণ।

মেলায় সন্তানদের নিয়ে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে এ মেলাতে সন্তানদের নিয়ে এসেছি, যাতে বিভিন্ন বই তারা দেখবে। অনেক কিছু শিখতে পারবে। দেশের ইতিহাস ও ভাষা শহীদদের সম্পর্কে যেন তারা জানতে পারে।

বাঙালির প্রাণের স্পন্দন মেলার চিরচেনা পরিবেশে উচ্ছ্বসিত লেখক ও প্রকাশকরা। তারা বলেন, আমরা যে ভাষায় কথা বলছি, আজ একুশ না থাকলে তো আমরা তা পারতাম না। আমাদের পরের প্রজন্ম যেন কৃষ্টি ও সংস্কৃতি জানে এবং তারা সত্যি জানে, সেই সঙ্গে বই পড়ে, আমরা তাই চাই।

গল্প, উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ, অনুবাদ, আত্মজীবনী সব শ্রেণীর বইই কিনছেন পাঠকরা। ভাষার মাসে মাতৃভাষায় লেখা বই কেনার মধ্য দিয়ে এ যেন ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার জানান দেওয়া।

মেলার দর্শনার্থীরা বলেন, আমরা যেহেতু আমাদের ভাষা নিয়ে গর্বিত, তাই আমি বাংলা ভাষায় বই কিনতে এসেছে। প্রতি বছরই বই মেলায় আসি। আমার পছন্দমতো বই কিনি। মেয়েদের দেই। তাদের উৎসাহিত করি।

উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৩২টি বই নিয়ে শুরু হয়েছিল ওমর একুশে বই মেলা। বছরের ব্যবধানে বইয়ের সংখ্যা হাজার ছাড়াচ্ছে। এরপরও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব দরবারে বাংলা ভাষার যে অর্জন, তা অনেকটাই পিছিয়ে। এরজন্য তরুণ প্রজন্মকেই এ দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলছেন তারা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.