পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট

‘বিতর্কিত’ বক্তব্যের মাধ্যমে শপথ ভঙ্গ এবং সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের মন্ত্রীর পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়েছে।

0 5,552

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এরশাদ হোসেন রাশেদের পক্ষে রিটটি করেন অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ।

জানা গেছে, মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়ার নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটির শুনানি হতে পারে।

গত ১৮ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরের জে এম সেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ‘শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে যাবে এবং সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত অসাম্প্রদায়িক একটা দেশ হবে। আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এম আব্দুল মোমেনের এমন বক্তব্যের পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও প্রতিবেশী দেশ ভারত।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২১ আগস্ট আব্দুল মোমেনের বক্তব্য অসাংবিধানিক উল্লেখ করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এরশাদ হোসেন রাশেদ।

নোটিশে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে আপনি ভারত সরকারকে যে অনুরোধ করেছেন, এটা আপনি করতে পারেন না। কারণ, সংবিধানে বলা হয়েছে, জনগণই সব ক্ষমতার উৎস। আপনি সংবিধানবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। আপনি মন্ত্রী পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।

পরদিন ২২ আগস্ট সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে হবে, ভারতে গিয়ে এমন কথা বলেননি বলে দাবি করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাকে যে অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে আমি তার ধারে কাছেও নেই। তাহলে কি এটা মিথ্যা অভিযোগ? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটি ডাহা মিথ্যা। নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলিনি।

তাহলে কী বলেছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গ্লোবাল কনটেস্ট যে অস্থিতিশীল অবস্থা তার পরিপ্রেক্ষিতে স্থিতিশীলতার কথা বলেছি।

এ ঘটনার পর ওইদিন অর্থাৎ ২২ আগস্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনের বক্তব্য কিছু মিডিয়ায় বিকৃতভাবে উপস্থাপনের অভিযোগ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে ঘিরে ধরেন, এ সময় সাংবাদিকদের অনুরোধে, তাদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাকে যে অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে তার ধারে কাছেও আমি বলিনি। আমি ইলেকশন নিয়ে কোন কথা বলি নাই। ভারতে (গিয়ে) ইলেকশন নিয়ে কোনো সাহায্যের জন্য বলিনি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কিন্তু কিছু মিডিয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপরোক্ত উক্তি উল্লেখ না করে তা বিকৃতভাবে প্রচার করছে। তা হলো- শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে হবে— ভারতে গিয়ে এমন কোনও কথা আমি বলিনি।

মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উক্তি বিকৃতভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানোর ঘটনাকে দুঃখজনক হিসেবে মন্তব্য করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.