খালেদা জিয়ার মেয়াদ স্থগিতের বিষয়ে যা বললেন আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার সাজার মেয়াদ স্থগিতের আবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে না। আইন মন্ত্রণালয় মতামত দিয়ে তা আজই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে।

0 10,111

বুধবার (১৬ মার্চ) আইন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

আইনমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়াকে তো জামিন দেওয়া হয়নি, জামিন দেন আদালত। আড়াই বছর আগে উনার পারিবারিক একটি দরখাস্ত করা হয় সেখানে আইনের কোনো উল্লেখ ছিল না। শেখ হাসিনার নির্দেশে সেটা আইনের মাধ্যমে ৪০১ ধারা অনুযায়ী তার সাজা স্থগিত রেখে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

আনিসুল হক বলেন, এ মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আমাদের কাছে একটি আবেদন আসছে। আমরা মতামত পাঠিয়ে দেব, সেই মতামত আপনারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানবেন।

এ আবেদনটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, না। এটা আর প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবে বলে আমার মনে হয় না। কারণ, গতবার যেটা দিয়েছিলাম সেটা প্রধানমন্ত্রীর কাছে যায়নি। তাই মনে হয় এটাও তার কাছে যাবে না।

চিঠিতে কি আবেদন করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখনো চিঠি পড়ে দেখিনি। এখন যাব চিঠি পড়ে দেখব তারপর মতামত দিয়ে সেটা পাঠিয়ে দেব।

এর আগে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো এবং তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে পরিবারের করা আবেদন পেয়েছি। তার পরিবারের ওই আবেদনটি মতামতের জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

তারও আগে  সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে সময় সংবাদকে জানান, সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে তার পরিবারের পক্ষ থেকে। আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার মন্ত্রণালয়ে এ আবেদন করেছেন। এবারও বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চাওয়া হয়েছে আবেদনে।

রাজধানীর গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো নয় বলে উল্লেখ করেন তার ভাই। তিনি আবেদনে বলেন, তার পা ফুলে গেছে। কোমরে ব্যথা, পিঠে ব্যথা আছে। তার এখনও কোনো কিছুই ঠিক হয়নি।
চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়া খুবই দরকার বলে জানিয়ে তার ভাই বলেন, সরকার অনুমতি না দিলে কীভাবে যাবে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে তার চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আগের মতোই বাসায় ম্যাডামের চিকিৎসা চলছে। তিনি আগের মতোই আছেন।
এদিকে শুক্রবার (১১ মার্চ) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের চারুয়া মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত জনসভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার আবেদন করে কোনো লাভ হবে না। এ ক্ষেত্রে আইনে যা আছে, সেটিই হবে।

২০২০ সালের ২৫ মার্চ দুই শর্তে সরকারের নির্বাহী আদেশে ৬ মাসের জন্য মুক্তি পান খালেদা জিয়া। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার উপধারা ১-এ সাজা স্থগিত দেখিয়ে এখন পর্যন্ত চার দফায় এ মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। সেই অনুযায়ী আগামী ২৪ মার্চ খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.