ট্রাফিক আইন মানলে দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব: প্রধানমন্ত্রী

গত ১৩ বছরে বাংলাদেশ উন্নয়নের যে স্তরে পৌঁছেছে সেটি সাধারণ মানুষের প্রতি আওয়ামী লীগের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, উন্নত সড়ক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কেন্দ্র থেকে প্রান্তিকপর্যায় পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপনে কাজ করছে সরকার।

0 10,525

বুধবার (১২ জানুয়ারি) সকালে গণভবন থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৪টি প্রকল্প ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করে এসব কথা বলেন তিনি।

এ সময় ট্রাফিক আইন মেনে চললে দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব উল্লেখ করে শেখ হাসিনা অনুরোধও করেন, কোনো অবস্থাতেই যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়া হয়।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত চারটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 
এ সময় স্কুল-কলেজ শুরু ও ছুটির ব্যস্ততম সময়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক পারাপারের জন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিজ উদ্যোগে বিশেষ ট্রাফিকের ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের নিজস্ব লোক থাকতে হবে যেন ছেলেমেয়েরা নিরাপদে সড়ক পার হতে পারে। ট্রাফিক পুলিশ স্কুল কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করবে।

একইসঙ্গে ব্যস্ততম সড়ক, রেললাইন বা ফুটপাত ধরে হাঁটার সময় শিক্ষার্থী,পথচারীদের সবাইকে আইন মেনে চলার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, সড়কে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে উত্তেজিত হয়ে কেউ যেন গণপরিবহন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ না করে আইন নিজের হাতে তুলে না নেন।

সড়কে দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে সমবেদনা ও শোক জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রছাত্রীদের বলব, রাস্তায় চলাচল করার জন্য ট্রাফিক রুলস মেনে চলতে হবে। প্রতিটি স্কুল-কলেজে ট্রাফিক রুলস শিক্ষা দেওয়া উচিত। সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
 
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন সড়কে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের দাবি জোরদার করে তুলেন শিক্ষার্থীরা। সড়কে নানা অনিয়মও প্রকট হয়ে উঠে তখন। সরকারও সমালোচনার মুখে পড়ে। এ নিয়ে  প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাসড়কে টানা গাড়ি চালিয়ে চালক ও হেলপাররা ক্লান্ত হয়ে পড়লে তাদের জন্য নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর বিশ্রামাগার স্থাপনের কথাও ভাবছে সরকার
 
চালক সংকট নিরসনে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করা হবে। চালকরা যেন সহজে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়ে যান, সেদিকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি।
সড়কে দুর্ঘটনার পর চালক-শ্রমিককে মারধর, গাড়িতে অগ্নিসংযোগের মতো কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান শেখ হাসিনা। বলেন, অনুরোধ করব সকলের কাছে, দুর্ঘটনা কেন ঘটল, কী কারণে ঘটলো, সেটা খুঁজে দেখা দরকার। কিছু হলেই গাড়ি পোড়াবেন, চালককে গণপিটুনি দেবেন, এটা ঠিক না। আইন কেউ হাতে তুলে নিবেন না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে, তারা দেখবে আইনগত ব্যবস্থা কী নেওয়া যায়।
 
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতায় নবনির্মিত প্রকল্প চারটি হলো: ঢাকা এয়ারপোর্ট মহাসড়কে শহিদ রমিজ উদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন পথচারী আন্ডারপাস, সিলেট শহর বাইপাস-গ্যারিসন লিংক ৪ মহাসড়ক, বালুখালী (কক্সবাজার)-ঘুনধুম (বান্দরবান) সীমান্ত সংযোগ সড়ক এবং রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর চেংগী নদীর ওপর ৫০০ মিটার দীর্ঘ সেতু।

প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং চিফ মেজর জেনারেল ইবনে ফজল শায়েকুজ্জামানসহ বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। প্রকল্পের স্পট থেকে সরকারি কর্মকর্তা ও উপকারভোগীরাও অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.