আন্দোলন-সংগ্রামে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে ছাত্রলীগ: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছাত্রলীগ সম্পর্কে অনেক সমালোচনা হয় গণমাধ্যমে; এতে দলের দুর্নাম হয়। ছাত্রদল নিয়ে সেভাবে লেখা হয় না। গ্রুপ বাড়ানোর জন্য ছাত্রলীগে যেন কোনো আলতু-ফালতু কেউ না আসতে পারে তার ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশের যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে ছাত্রলীগ।

0 21,886

বুধবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ছাত্রলীগ আয়োজিত শোক দিবসের অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। সঠিক নেতৃত্ব দিতে হলে নিজেদের আদর্শ বুকে ধারণ করে সবাইকে গড়ে তুলতে হবে। অর্থসম্পদের পেছনে ছুটলে, দেশকে কিছু দেয়া সম্ভব হয় না।

ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন ধান কাটার লোক পাওয়া যাচ্ছিল না তখন খবর দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রলীগের ছেলেমেয়েরা ধান কাটতে মাঠে নেমে গেছে এবং কৃষকের ঘরে ধান পৌঁছে দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। করোনার সময় যেখানে লাশ ফেলে আত্মীয় পালিয়ে যায় সেখানে আমাদের ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসার ব্যবস্থা, অক্সিজেনের ব্যবস্থা, রোজার মাসে খাবার ব্যবস্থা সব আমাদের ছাত্রলীগ করেছে।

তিনি বলেন, আমি আগেই বলেছি যে ছাত্রলীগ সব কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। এই অগ্রগামী সংগঠন হিসেবে সবার আগে মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছে ছাত্রলীগ। তারা যখন মাঠে নেমেছে তার সঙ্গে অন্য সংগঠনগুলোও কিন্তু নেমেছে। তাই আমি ছাত্রলীগকে বলব, মানবতার সেবা করে যেতে হবে, পাশাপাশি সব থেকে বেশি লেখাপড়া শিখতে হবে। আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন ও জনশক্তি চাই। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আসবে; তার উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে আমাদের আজকের প্রজন্ম বা প্রজন্মের পর প্রজন্ম নিজেকে প্রস্তুত করবে। কারণ এখন প্রযুক্তির যুগ, তথ্যপ্রযুক্তির যুগ, বিজ্ঞানের যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষাদীক্ষায় উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সেভাবে নিজেদের তৈরি করতে হবে। দেশ চালাতে গেলে শিক্ষার প্রয়োজন আছে, জ্ঞানের প্রয়োজন আছে, ইতিহাস জানার প্রয়োজন আছে এবং দূর-দৃষ্টিসম্পন্ন হতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অস্ত্রের ঝনঝনানি ও বোমাবাজি ছিল। আমরা সেখান থেকে ঘুরিয়ে আনতে পেরেছি। শিক্ষার বিভিন্ন পরিবর্তন নিয়ে এসে আধুনিক শিক্ষা যাতে হয় সেদিকে আবার অনেক দূর এগিয়ে গেছি। প্রতি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়, প্রতি উপজেলায় সরকারি স্কুল-কলেজ করে দিয়েছি। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দিচ্ছি, উচ্চশিক্ষার জন্য আলাদা ট্রাস্ট করেছি। আগে আমাদের শিক্ষার হার ৪৫ শতাংশ ছিল, সেখানে থেকে ৭৫ শতাংশে উন্নীত করতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া বলল যে ছাত্রদল দিয়ে নাকি আওয়ামী লীগকে সিধা (সোজা) করে করে দেবে; আর জিয়াউর রহমান শুরু করেছিল মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে। আমি ছাত্রলীগের হাতে কাগজ-কলম-বই তুলে দিলাম, বললাম আগে লেখাপড়া শিখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এখন করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা যাচ্ছে; তাই আমি সব ছাত্র-ছাত্রীকে বলব প্রত্যেককে কিন্তু সাশ্রয়ী হতে হবে। বিদ্যুৎ যেন সীমিত আকারে ব্যবহার করা হয়। যেটুকু লাগে সেটুকু ব্যবহার করতে হবে। পানির ব্যবহার ঠিকমতো করতে হবে। ট্যাপ ছেড়ে গোসল করলে চলবে না। এক ফোঁটা পানিও যাতে অপচয় না হয়; উন্নত দেশগুলোতে পানির ব্যবহার সীমিত করা হয়েছে। এই ভয়াবহ অবস্থায় আমরা যদি সাবধানে থাকি, তাহলে আমাদের অবস্থাটা সামাল দিতে পারব।

বঙ্গমাতার স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করতে বঙ্গবন্ধুকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়েছেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব। এমনকি জেলে থাকা দলের নেতাদের পরিবারের দেখভালও করেছেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ক্ষমতা দখলকারীরা শুধু জাতির পিতাকে হত্যাই করেনি, তার নাম মুছে ফেলারও চেষ্টা করেছে।

আওয়ামী লীগ গঠনের জন্য বঙ্গবন্ধু মন্ত্রিত্বও ছেড়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.