সরকারি কর্মকর্তা গ্রেফতারে অনুমতি ন্যায়বিচার পরিপন্থি হওয়ায় বিধানটি বাতিল: হাইকোর্ট

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে এবং গ্রেফতার করতে লাগবে না অনুমতি। আইন, সংবিধান, মৌলিক অধিকার ও ন্যায়বিচার পরিপন্থি হওয়ায় আগের বিধানটি বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। এদিকে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

0 21,809

ফৌজদারি অপরাধে মামলায় অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় দেয়া হলো চার্জশিট। তারপরও ধরাছোঁয়া যাবে না আসামিকে। গ্রেফতার করতে লাগবে নিয়োগ কর্তৃপক্ষের অনুমতি। সরকারি কর্মকর্তাদের এমন সুযোগ দিয়ে ২০১৮ সালে আইন পাস করে সরকার।


আমলযোগ্য অপরাধে মামলা হলে যেখানে সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করা হয়, সেখানে সরকারি কর্মকর্তাদের এমন সুযোগ দেয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আইনের বিধানটি চ্যালেঞ্জ করা হয় উচ্চ আদালতে। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) আদালত বলেন, আইনটি সংবিধানের সঙ্গে শুধু সাংঘর্ষিকই নয়, মৌলিক অধিকার পরিপন্থি।

আদালত রায়ে সরকারি চাকরি আইন-২০১৮-এর ৪১(১) ধারা বেআইনি, সংবিধান ও মৌলিক অধিকার পরিপন্থি বলে ঘোষণা করেন। আদালত বলেন, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে আছে, আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান, তা সুনির্দিষ্টভাবে বলা আছে। তারপরও ৪১(১) ধারা করে সেখানে সরকারি কর্মচারীদের আলাদাভাবে একটি সুরক্ষা দেয়া হয়েছে। তা কেনোভাবেই সংবিধানসম্মত নয়, এ আইন একটি মেলাফাইড (অসৎ) উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।  

রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘আমরা আদালতকে দেখিয়েছি এ আইন করার পেছনে একটাই উদ্দেশ্য, সেখানে সরকারি কর্মচারীদের সাধারণ নাগরিক থেকে একটু আলাদা করে তাদের একটি বিশেষ শ্রেণি হিসেবে দেখিয়ে, তাদের অনেক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা। অপরাধ করলেও যেন তারা অপরাধী হিসেবে শান্তি না পায়। বিশেষ করে এ আইনের মাধ্যমে দুদকের যে স্বাধীনতা, সেটি খর্ব করা হয়েছিল।’

মানতে নারাজ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তার দাবি, হেনস্তা থেকে বাঁচাতে এমন সুযোগ দেয়া হয়েছিল। ঘোষণা দেন রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার।

রায়ের পর্যবেক্ষণে উচ্চ আদালত আরও বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল ও গ্রেফতারের অনুমতি নিতে হলে বিচারপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে।

১১ বছর আগে একই ধরনের সুযোগ দেয়া হয়েছিল দুদক কর্মকর্তাদের। সেটিও বাতিল করেছিলেন দেশের উচ্চ আদালত।
Leave A Reply

Your email address will not be published.