‘দেশকে উন্নয়নশীলের কাতারে আনতে পারা আমার জন্য সৌভাগ্য’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার পুরো পরিবারকে নিঃশেষ করে দেওয়া হয়েছে। আমাকেও অনেকবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তবুও থেমে থাকিনি। গত এক দশকে বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিয়ে আসতে পারা আমার জন্য একটি বড় সৌভাগ্য।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে মালদ্বীপের সংসদ পিপলস মজলিসে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো একক দেশ চাইলেই উন্নয়ন করতে পারে না৷ সবার সহযোগিতার দরকার হয়।
এ সময় শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সমৃদ্ধির জন্য মালদ্বীপ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
এদিকে মালদ্বীপের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি বা পিটিএ স্বাক্ষর করার আগ্রহ দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশটিতে প্রথমবার দ্বিপক্ষীয় সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সলিহ’র সঙ্গে বৈঠকের পর, দুই দেশের মধ্যে তিনটি সমঝোতা ও চুক্তি সই হয়।
সমঝোতা অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নেবে মালদ্বীপ। এছাড়া, মালদ্বীপের নাগরিকদের ভিসা ছাড়া বাংলাদেশে ভ্রমণের বিষয়সহ, সরাসরি আরও ফ্লাইট চালুর বিষয়েও আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে বর্ণাঢ্য কায়দায় অভ্যর্থনা জানানো হয় শেখ হাসিনাকে।
প্রথমবারের মতো মালদ্বীপ সফরের দ্বিতীয় দিন সকালে শেখ হাসিনা দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে পৌঁছালে সামরিক কায়দায় তাকে সালাম জানান প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের সদস্যরা। রীতি অনুযায়ী বাজানো হয় দুই দেশের জাতীয় সংগীত। ছিল গান স্যালুটের আয়োজনও।
অভ্যর্থনা পর্বে উপস্থিত সাংস্কৃতিক কর্মীদের পরিবেশনা উপভোগ করেন ইব্রাহিম সলিহ ও শেখ হাসিনা।
এরপর, রাষ্ট্রপতি ভবনের পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষরের আনুষ্ঠানিকতা সারেন প্রধানমন্ত্রী। সূচির ধারাবাহিকতায় দুই শীর্ষ নেতা একান্ত বৈঠক করেন নিজেদের মধ্যে। পরে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে দুদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন প্রেসিডেন্ট সলিহ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ বৈঠকের পর প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত এবং যুব ও ক্রীড়া খাতের উন্নয়নের আলাদা দুটি সমঝোতা স্মারকে সইয়ের পর সেগুলো বিনিময় করেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা। এ সময়, দ্বৈত কর প্রত্যাহারের চুক্তিতেও সই করেছে ঢাকা-মালে।
এছাড়া এবারের সফরে বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে দ্বীপরাষ্ট্রটিকে ১৩টি সামরিক যান উপহার হিসেবেও তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরে দুই শীর্ষ নেতা যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। এ সময়, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, তার বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। আগামীতে দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার সম্ভাবনা তুলে ধরেন তিনি।
করোনার প্রকোপ কমে এলে, মালদ্বীপের নাগরিকদের ভিসা ছাড়া বাংলাদেশে প্রবেশাধিকার দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।