চা শ্রমিকদের ভালো মন্দ দেখার দায়িত্ব সবার: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চা শ্রমিকদের ভালো মন্দ দেখার দায়িত্ব আমাদের সবার। আর এই খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে আমাদেরই দেখতে হবে।
শনিবার (২৭ আগস্ট) বিকেল চারটার পরে গণভবনে চা শ্রমিকদের দাবি নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাংলাদেশ চা সংসদের ১৩ প্রতিনিধিসহ চা বোর্ডের প্রতিনিধিরা। দুই ঘণ্টার বেশি সময় আলোচনায় সরকারপ্রধান পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করেন প্রত্যেকটি খুঁটিনাটি বিষয়। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৫০ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। বাগান মালিকদের বৈঠকের পর দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা করার ঘোষণা আসে।
শেখ হাসিনা বলেন, টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তখন শ্রমিকদের কোনো নাগরিকত্ব ছিল না। প্রতিষ্ঠান বাইরে থেকে নিয়ে এসে তাদের দিয়ে কাজ করাতো। তিনি যখন চেয়ারম্যান হলেন তখন তাদের নাগরিকত্ব দেয়া হলো। কাজেই তাদের ভালো মন্দ দেখা সবার দায়িত্ব। আর এই খেটে মানুষগুলোকে আমাদের একটু দেখতে হবে।
বৈঠক শেষে গণভবনের ফটকে সংবাদমাধ্যমকর্মীদের সরকারি সিদ্ধান্ত জানান প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের ভালো থাকার বন্দোবস্ত করতে বদ্ধপরিকর। সবমিলে দৈনিক প্রায় ৫০০ টাকা পাবেন তারা।
তিনি বলেন, সবকিছু আলোচনার পর যেটি হয়েছে, সেটি হলো শ্রমিকদের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণ করে দিয়েছেন ১৭০ টাকা। অন্য সব সুবিধা আনুপাতিক হারে বেড়ে প্রায় সাড়ে ৪০০ বা ৫০০ টাকার মতো দৈনিক পড়বে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের রোববার থেকে কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন।
নতুন মজুরি কাঠামোতে দৈনিক সবমিলে সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পাবেন চা শ্রমিকরা। সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার কথা জানিয়ে, রোববার থেকে শ্রমিকরা কাজে ফিরবেন বলে জানিয়েছে মালিকপক্ষ।
আন্দোলনে বহুপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চললেও শ্রমিকদের দাবি শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীই অনুধাবন করেছেন বলে জানাচ্ছেন এই শিল্প সংশ্লিষ্টরা।
টানাটানির বাজারে দৈনিক মজুরি ১২০ টাকার ঘরে বাংলাদেশের চা শ্রমিকদের। আর্থিক টানাপোড়েন সামলাতে একাট্টা হয়ে বেতন বাড়ানোর দাবি নিয়ে কাজ বন্ধ করে ৯ আগস্ট থেকে আন্দোলনে নামেন চা শিল্পের মূল কারিগররা।
তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আঞ্চলিক ও বিভাগীয় পর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠকেও যখন সমাধান আসেনি। তখন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য হলো মালিকপক্ষ।