ফরিদপুরে আ.লীগের বর্ধিত সভা ঘিরে উৎসবের আমেজ

আগামী ১২মে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শনিবার (১৬ এপ্রিল) ফরিদপুরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা। এ সভাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু হয়েছে।

0 9,914

আগামী সম্মেলনে দলীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীরা নিজের ছবির সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবি দিয়ে ব্যানার, বিলবোর্ড ও তোরণ নির্মাণ করেছেন। শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় থেকে শুরু করে ভাঙ্গা রাস্তার মোড়, র‌্যাফেলসইন-এর মোড়, গোরস্থান মোড়, আলীপুর মোড়, জনতা ব্যাংকের মোড়, খন্দকারের মোড় হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত শোভা পাচ্ছে ব্যানার ও তোরণ।

শনিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে শহরের গোয়ালচামট মহল্লায় হোটেল র‌্যাফেলসইন-এ এই বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে উপস্থিত হওয়ার কথা রয়েছে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহর।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সবুল চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি থাকার কথা রয়েছে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাংসদ কর্নেল ফারুক খানের। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মীর্জা আজম, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ও সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন।

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২২ মার্চ জেলার আওয়ামী লীগের সবশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন। পরে ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।

এদিকে ফরিদপুর আওয়ামী লীগের রাজনীতির পটপরিবর্তন, বিশেষত ফরিদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য খন্দকার মোশাররফের যুগের অবসানের পর বহুদিনের কাঙ্ক্ষিত এই সম্মেলন নিয়ে দুই বছর ধরে গ্রুপিং, লবিং ও দৌড়ঝাঁপ চলেছে।

সাবেক মন্ত্রী, ফরিদপুর সদরের এমপি খন্দকার মোশাররফ হোসেনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পতনের পর থেকেই ফরিদপুরে আওয়ামী রাজনীতি একাধিক ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানে সেই বিভক্তি এখন দুটি অংশে প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য ধারায় চলছে। এর একটি হলো আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ সমর্থিত অংশ এবং অপরটিতে রয়েছে যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাংসদ মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন সমর্থিত অংশ।

সম্মেলন সামনে রেখে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টিতে আসার জন্য জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রাপ্তির আশায় শহরের আনাচে-কানাচে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থী ও তার সমর্থকরা।

এই পদ-পদবী প্রাপ্তির প্রচারণায় রয়েছেন সভাপতির তালিকায় জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিপুল ঘোষ, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শামীম হক, সাবেক কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য মো. ফারুক হোসেন ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামসুল হক।

সাধারণ সম্পাদকের পদপ্রত্যাশী আশা করছেন, বর্তমান ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঝর্না হাসান, ফরিদপুর পৌরসভা মেয়র অমিতাভ বোস, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. লিয়াকত হোসেন, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক দীপক কুমার মজুমদার, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জিয়াউল হাসান ও ফরিদপুর পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ।

বর্ধিত সভা প্রসঙ্গে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন বলেন, ‘একটি বড় দলের গ্রুপিং থাকতেই পারে, তবে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে কেউ সেটা প্রমাণ করার দুঃসাহস দেখাবে না, এমনটি প্রত্যাশা করি।’

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, এরই মধ্যে বর্ধিত সভার সব কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি। কেন্দ্রীয় নেতাদের দাওয়াত ও তাদের আপ্যায়নের সক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.