হৃদয়ের খোরাক জোগাতে জেলায় জেলায় বইমেলা চান প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের প্রতিটি মহকুমায় আগে মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো। এখন আর সেটা দেখা যাচ্ছে না। এটি করা দরকার।

0 11,182

তিনি বলেন, আমরা খাদ্যনিরাপত্তা করে দিয়েছি। এখন হৃদয়ের খোরাক জোগাতে হবে। এটা সাহিত্য-সংস্কৃতির মাধ্যমে হবে। এ জন্য মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান জেলায় জেলায় করা উপযুক্ত হবে। এ বিষয়ে প্রশাসনের দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়েছিলেন।

তিনি বলেন, সেই স্কুলজীবন থেকে, আমরা তো সব সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতাম বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম করতে, তারপর বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বাংলা একাডেমিতে যখন বইমেলা শুরু হলো, আমার তো মনে হয় কোনো বইমেলা বাদ দেইনি। সারাদিন স্বাধীনভাবে বইমেলায় ঘুরে বেড়িয়েছি। এটা কিন্তু যখন প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেছি, তখনই পায়ে শেকল পড়ল। নিরাপত্তার অজুহাতে বইমেলায় আগের মতো স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ানোর সেই সুযোগটা আর থাকেনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন আবার বিরোধী দলে ছিলাম তখন আবার বইমেলায় গিয়েছি, তখন আবার সুযোগ ছিল। এখন আবার ২০০৯ সাল থেকে সেই বন্দীদশায় আছি। এখন আবার করোনার কারণে আরও বেশি বন্দী হয়ে গেছি। এটাই দুঃখ থেকে গেল।

বইমেলা একমাস চলতে পারে, এমন ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, প্রকাশকদের পক্ষ থেকেও একটা অনুরোধ এসেছে যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ মার্চ, আমরা তাই মার্চ মাস পর্যন্ত মেলা চালাতে চাই। আমিও মনে করি মেলা আমরা একমাস চালাতে পারি। তবে সেটা আপনারা নিজেরাও বিবেচনা করবেন।

প্রসঙ্গত, আজ মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। মঙ্গলবার বিকেলে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বইমেলা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

৩৮তম এ বইমেলা চলবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের বইমেলার মূল প্রতিপাদ্য- ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’।

ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে বইমেলা শুরু হওয়ার রীতি থাকলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার বইমেলা শুরু হচ্ছে মাসের মাঝামাঝিতে। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে, তবে প্রবেশ করা যাবে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত। ছুটির দিনে মেলার দরজা খুলবে বেলা ১১টায় এবং একুশে ফেব্রুয়ারির দিন সকাল ৮টায়।

এবার মেলায় মোট ৫৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭৬ ইউনিট স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানের জন্য রয়েছে ১৪২টি স্টল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৩২টি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে ৬৩৪টি স্টল। প্যাভিলিয়ন রয়েছে ৩৫টি। উদ্যান অংশে পুরো মেলায় প্যাভিলিয়নগুলো ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গত বছর প্যাভিলিয়ন শুধু স্বাধীনতাস্তম্ভের সামনে রাখায় সমালোচনা হয়েছিল।

Leave A Reply

Your email address will not be published.