কত আসনে ইভিএম সিদ্ধান্ত এ মাসেই

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কতটি আসনে ব্যবহার করা হবে এখনও সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

0 18,861

নির্বাচন কমিশন (ইসি) তার সক্ষমতা ও যৌক্তিকতা বিবেচনা করে এ মাসের মধ্যেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। যেসব আসনে ইভিএমে ভোট হবে সেখানে ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালানো হবে বলেও জানান তিনি।

রোববার (২১ আগস্ট) ইসি ভবনে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মো. আলমগীর।

জাতীয় নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তর্ক- বিতর্ক লেগেই আছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনেই ইভিএমে ভোট চায়। আর তাদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ইভিএমকে কারচুপির যন্ত্র বলে অভিযোগ করে আসছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির সংলাপে ২২টি দল ইভিএম নিয়ে মতামত তুলে ধরেছে। এর মধ্যে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ ১৪টি দল এই যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ে সংশয় সন্দেহ প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি দল সরাসরি ইভিএমের বিরোধিতা করেছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগসহ চারটি দল ইভিএমে ভোট চেয়েছে। আর কয়েকটি দল শর্তসাপেক্ষে ইভিএমের পক্ষে বলেছে। আর বিএনপিসহ ৯টি দল ইসির সংলাপ বর্জন করে। তারাও ইভিএমের বিপক্ষে। তারা কোনোমতেই এটির মাধ্যমে ভোট চায় না।

এ নিয়ে মো. আলমগীর বলেন, ইভিএম ব্যবহার হবে কিন্তু কত আসনে হবে, সেই বিষয়ে আমরা এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পরিনি। এটা নিয়ে আমরা মতবিনিময় করছি, আলোচনা করছি। আমাদের সক্ষমতা কী আছে, কত ইভিএম আছে, আমাদের প্রশিক্ষিত জনবল কত আছে? সাপোর্টিং জনবল কত আছে? এগুলো দেখছি, এগুলো দিয়ে কত আসনে ভোট করা যাবে। আর যদি বেশি করতে চাই, আরও কত (ইভিএম) লাগবে, তাতে কত টাকা লাগবে, এ জন্য নতুন প্রজেক্ট নিতে হবে কি না? সেই সময় আমাদের আছে কি না? প্রকিউরমেন্ট করতে, প্রশিক্ষণ দিতে, এসব নিয়ে আলোচনা চলছে।

কমিশনার বলেন, এ মুহূর্তে আমাদের ৭০ থেকে ৮০টি আসনে ভোট করার মতো সক্ষমতা আছে। অনেকে রাজনৈতিক দল ৩০০ আসনে ইভিএম চায় আবার অনেকে একটি আসনেও চায় না। সবার কথা সমানভাবে গুরুত্ব দিতে পারবে না ইসি। ইসি তার সক্ষমতা ও ইভিএমের যৌক্তিকতার ওপর গুরুত্ব দেবে। কারও মুখের দিকে তাকিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না। একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর ভোট করার জন্য সক্ষমতা ও ইভিএমের সুবিধা বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

ইভিএম নিয়ে সন্দেহ অবিশ্বাস ও অভিযোগের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, যতক্ষণ না আপনি প্রমাণ দেবেন ইভিএমে ভোট কারচুপি করা যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত তো আমি এটা বিশ্বাস করব না। কারচুরির বিষয়টি অভিযোগ, কিন্তু প্রমাণিত নয়। যারা অভিযোগ দিয়েছেন, সেগুলো আমরা যাচাই করছি। কিন্তু যারা আমাদের কাছে এসে অভিযোগ দেননি, সেটা তো আমরা আমলে নিইনি।

ইসি যে ইভিএম ব্যবহার করে, তাতে কারচুপির সুযোগ নেই দাবি করে মো. আলমগীর বলেন, ইভিএমে চুরি হতে পারে কিন্তু আমাদের কাছে যে ইভিএম আছে, সেটায় চুরি করা যায়, তার প্রমাণ দেন। সেই চ্যালেঞ্জ দেয়া হয়েছে কয়েকবার। কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে আজ পর্যন্ত কেউ তো প্রমাণ করতে পারেনি যে ‘আপনাদের যে ইভিএম তাতে চুরি করা যায়।’

আরও পড়ুন: অধিকাংশ দল ইভিএম বিশ্বাস করছে না: সিইসি

মো. আলমগীর বলেন, নির্বাচনে গুরুতর কোনো অনিয়ম হলে ওই নির্বাচন স্থগিত করতে পারে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ওই নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা বিদ্যমান আরপিওতে নেই। ইসি মনে করে, এ ক্ষমতা থাকা উচিত। এ–সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের একটি রায় আছে। তবে তিনি সেটা দেখেননি। আদালতের রায় আইনে আনা ইসির দায়িত্ব। এটি আইনে যুক্ত করতে সমস্যা নেই।

Leave A Reply

Your email address will not be published.