প্রযুক্তির সহায়তায় মামলা ব্যবস্থাপনায় গতিশীলতা আনার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বিচার বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে তথ্যপ্রযুক্তির সব সুবিধা ব্যবহার করে মামলা ব্যবস্থাপনায় গতিশীলতা আনার নির্দেশ দিয়েছেন।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস-২০২১’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বঙ্গভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই নির্দেশ দেন।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘দেশের সকল আদালতের কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এতে বিচার কার্যক্রমে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।’
সুপ্রিম কোর্ট যেহেতু ’কোর্ট অব রেকর্ড’ সেহেতু এর সব নথি ডিজিটাল নথিতে পরিণত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং মামলা দায়ের থেকে রায় ঘোষণা পর্যন্ত সমস্ত কার্যক্রমকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করাও জরুরি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
‘ইতোমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে অনলাইন কজলিস্ট চালু হয়েছে এবং অনলাইন বেল কনফার্মেশন ব্যবস্থা কার্যকরভাবে চলছে,’ যুক্ত করেন আবদুল হামিদ।
বিচার কাজ একটা জটিল বিষয় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বিচারকদের আরো বেশি কাজ করার অনুরোধ করেন কেননা মামলার সংখ্যা দিন দিন যে হারে বাড়ছে সেটাকে আয়ত্তের মধ্যে আনতে হবে।
বিচার বিভাগ নিয়ে সরকারের চিন্তাভাবনা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এবং বিচারকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য আন্তরিক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি জানান, বিচার বিভাগের আধুনিকায়নে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক এবং এ লক্ষ্য অর্জনে ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিচারকদের খেয়াল রাখতে হবে মামলার রায় হওয়ার পর রায়ের কপি পাওয়ার জন্য বিচারপ্রার্থীদের যেন আদালতের বারান্দায় ঘোরাঘুরি করতে না হয়।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি দেশে সামরিক শাসন জারির মাধ্যমে সংবিধানকে নানাভাবে কাঁটাছেঁড়া করে গণতন্ত্রকে চিরতরে হত্যার অপচেষ্টা করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের ৫ম ও ৭ম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করেছে।
রাষ্ট্রপতি মনে করেন, ১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট তার যাত্রা শুরু করে মানুষের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং স্বল্প সময়ে বিচারপ্রার্থীদের ন্যায়বিচার প্রদানে কাজ করে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, এমপি, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন এবং জাজেস কমিটির সভাপতি এবং আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।